১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ , ২৬ মাঘ ১৪৩১ 

চাকরি ও প্রস্তুতি

মাউশির ৬১০ পদের নিয়োগ আটকে, বিপাকে চাকরিপ্রার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

প্রকাশিত: ১১:১৩, ১১ জানুয়ারি ২০২৫

মাউশির ৬১০ পদের নিয়োগ আটকে, বিপাকে চাকরিপ্রার্থীরা

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের চার বছরের বেশি সময় পরও শেষ হয়নি শিক্ষামন্ত্রনালয়ের অধীন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) কর্মচারী নিয়োগ কার্যক্রম। একাধিক ধাপে বেশ কিছু পদের নিয়োগ চূড়ান্ত হলেও এখনো হয়নি ৬১০টি পদের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ।

কবে নাগাদ এসব পদের নিয়োগ কার্যক্রম শেষ হবে, তা স্পষ্ট করে বলতে পারছেন না মাউশির নিয়োগ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এ দিকে দীর্ঘ সময় ধরে নিয়োগ আটকে থাকায় হতাশ চাকরিপ্রার্থীরা। তারা এসব নিয়োগ পরীক্ষার ফল দ্রুত প্রকাশের দাবিতে মানববন্ধনও করেছেন।

প্রদর্শক পদের নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী আতিকুর রহমান বলেন, চার বছরেও নিয়োগ শেষ করতে পারেনি মাউশি। এর চেয়ে দুঃখজনক আর কি হতে পারে? ইতিমধ্যে অনেকের চাকরির বয়সও শেষ হয়ে গেছে। দ্রুততম সময়ে ফল প্রকাশের দাবি জানাই, না হলে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।

একই সুরে কথা বলেছেন গত ১৯ নভেম্বর মাউশিতে আয়োজিত মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী আব্দুল মালেক। তিনি বলেন, এ চাকরির আশায় বেশ কয়েকটি চাকরিতে যোগদানও করিনি। অথচ মাউশি কর্তৃপক্ষ আমাদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে।
এসব পদের নিয়োগ কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে মাউশির মহাপরিচালক (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. একিউএম শফিউল আজম কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

 ২০২০ সালের ২২ অক্টোবরে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির ৪ হাজার ৩২টি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় মাউশি। এরপর ধাপে ধাপে নিচের দিকের পদগুলোতে চূড়ান্ত নিয়োগ দেওয়া হলেও দশম গ্রেডের প্রদর্শক, গবেষণা সহকারী, সহকারী গ্রন্থাগারিক কাম ক্যাটালগার, ল্যাবরেটরি সহকারী পদের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়নি। এ চার পদে শূন্য পদ সংখ্যা ৬১০টি। এর মধ্যে প্রদর্শক-৫১৪টি, গবেষণা সহকারী-২১ টি, সহকারী গ্রন্থাগারিক কাম ক্যাটালগার ৬৯টি, ল্যাবরেটরি সহকারী ৬টি।

মাউশি থেকে জানা যায়, ২০২১ সালের আগস্টে প্রদর্শক ও গবেষণা সহকারী পদের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এর আড়াই বছর পর গত ২৪ এপ্রিল লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এরপর গত ৪ মে থেকে ৬ জুন পর্যন্ত মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কাছাকাছি সময়ে সহকারী গ্রন্থাগারিক কাম ক্যাটালগার, ল্যাবরেটরি সহকারী পদের মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও ফল প্রকাশ করা হয়নি। এ চার পদে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিল ৭ হাজার ৯৬৩ প্রার্থী।

মাউশির সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তার দাবি, এসব পদের নিয়োগ জট খোলার ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আন্তরিকতার ঘাটতি রয়েছে। কেননা মাউশির একটি অংশ চায় নতুন করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে। এ জন্যই ফল প্রকাশে তাল বাহানা করা হচ্ছে। এ ছাড়া মাউশির নিয়মিত মহাপরিচালক ও পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) না থাকাও ফল আটকে থাকার অন্যতম কারণ।
 
মাউশি সূত্র বলছে, ক্ষমতার পট পরিবর্তের পর এসব পদে নিয়োগে কোটার প্রয়োগের বিষয়টি সামনে এনে কালক্ষেপণ শুরু করে একটি পক্ষ। যদিও গত ১৩ নভেম্বর নিয়োগে কোটা প্রয়োগের বিষয়টি স্পষ্ট করে শিক্ষামন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিবকে চিঠি দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এতে স্বাক্ষর করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (বিধি অনুবিভাগ) উদয়ন দেওয়ান।

চিঠিতে বলা হয়, ‘২২ অক্টোবর, ২০২০ তারিখে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির শর্তাধীনে অর্থাৎ সবশেষ প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির আলোকেই নিয়োগ সম্পন্ন করাই সমীচীন হবে।’