০১ জুন ২০২৫ , ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ 

শিল্প ও সাহিত্য

শিশুসাহিত্যে মরণোত্তর পুরস্কার পেল শিশুসাহিত্যিক রাইদাহ গালিবা!

বাংলা ওয়াচ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২:৩০, ২০ মে ২০২৫

শিশুসাহিত্যে মরণোত্তর পুরস্কার পেল শিশুসাহিত্যিক রাইদাহ গালিবা!

রাইদাহ গালিবা, ডাক নাম কুইন। শিশুসাহিত্যিক। তাকে অনেকেই চিনতো তার লেখা মজার মজার সব রূপকথার জন্য। ১২ বছরের ক্ষুদ্র জীবনে সে লিখেছে বেশ কিছু রূপকথার গল্প ও কবিতা। লিখে প্রকাশ করে রেখে গেছে ছয়টি গল্প, যেগুলো ছাপা হয়েছিলো 'ধানশালিকের দেশ' ও 'শিশু' সহ দেশের সেরা সব ছোটদের পত্রিকায়!

'সেগুলো রেখে গেছে, বা 'হয়েছিলো' -- এসব বলছি তার কারণ সে আর পৃথিবীতে নেই!! চিকিৎসকের অবহেলায় ২০২২ সালের নভেম্বরের শেষ দিকে পৃথিবী থেকে হারিয়ে গেছে দুর্লভ এই শিশুসাহিত্যিক !!

পৃথিবী থেকে চলে গেলেও ,শিশু কিশোরদের জন্য রাইদাহ গালিবা রেখে গেছে তার অনবদ্য সব সৃষ্টি - মজার মজার সব রূপকথা!!

শিশু-কিশোরদের জন্য রাইদাহ গালিবার লেখা শিশুতোষ গ্রন্থ সংখ্যা ৬টি। এই ৬টি গ্রন্থ প্রকাশ হয়েছে অমর একুশে গ্রন্থমেলায় একের পর এক..!

রাইদাহ গালিবার রচিত ও ক্রমান্বয়ে প্রকাশিত  শিশুতোষ রূপকথাগুলো হলো --  'পিটুর জাদু জুতা', 'এক যে ছিল মুচি', 'ইমা ও  দৈত্য', 'ভয়ংকর গাছ', 'আন্ডোরে রাজ্যের কাহিনি',' বাঘ ও দৈত্য '।

পৃথিবী থেকে অকালেই হারিয়ে যাওয়া তুখোড় মেধাবী ও  অবিস্মরণীয় সৃজনশীল রাইদাহ তার অনবদ্য প্রতিভার জন্য শিশুসাহিত্যে এবার পেলো  (মরণোত্তর) পুরস্কার - "একান্নবর্তী রনজিৎ বিশ্বাস স্মৃতি সম্মাননা - ২০২৫" ।

শিশুসাহিত্যিক রাইদাহ গালিবা

রাইদাহর এই সম্মাননা আনুষ্ঠানিক ভাবে তার মা কবি ও গল্পকার কানিজ পারিজাতের হাতে তুলে দেয় সাহিত্যের ছোট কাগজ 'একান্নবর্তী' ,যারা প্রতিবছর শিল্প ও সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য গুণী কৃতিজনদের "একান্নবর্তী রনজিৎ বিশ্বাস স্মৃতি সম্মাননা" দিয়ে সম্মানিত করেন! এবার চারজন গুনী ও কৃতিজন পেয়েছেন  "একান্নবর্তী রনজিৎ বিশ্বাস স্মৃতি সম্মাননা - ২০২৫"। অনুষ্ঠান আয়োজিত হয় জাতীয় যাদুঘর এর সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে গত ১৭ই মে ২০২৫। অনুষ্ঠানটিতে একান্নবর্তী পত্রিকার সম্পাদক শেলী সেনগুপ্তার সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত আবৃত্তি শিল্পী ড. ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায় ও বাংলা একাডেমি পদক প্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক রফিকুর রশিদ। আরো উপস্থিত ছিলেন কথা সাহিত্যিক ঝর্ণা রহমান, কথা সাহিত্যিক সুজন বড়ুয়া, সহ শিল্প ও সৃজনশীল জগতের অনেক গুনি ও জ্ঞানীজনেরা।

ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায় ও রফিকুর রশিদ পৃথক পৃথকভাবে তাদের বক্তব্যে ভারাক্রান্ত হৃদয়ে অবিস্মরণীয় প্রতিভাধর রাইদাহ গালিবার সম্পর্কে তাদের দুজনেরই স্মৃতিচারণ করেন ও এভাবেই সৃজনশীল প্রতিভা ও অনন্য সব সৃষ্টিকর্মের ভেতর দিয়ে রাইদাহ যে পাঠকের অন্তরে বেঁচে থাকবে এমন প্রত্যাশা করেন। তাদের বক্তব্যে উপস্থিত সকলের চোখ ভিজে ওঠে।

রাইদাহ গালিবার মা কবি ও গল্পকার কানিজ পারিজাত অশ্রুভেজা চোখে একান্নবর্তী এর এই আয়োজনকে ধন্যবাদ জানান ও তার অনুভূতিতে বলেন -- রাইদাহ'র সৃষ্টিকর্ম নিয়ে যখন কোথাও কাজ বা কোথাও ওকে সম্মানিত করা হয়, তখন মনে হয় তার এই অনবদ্য সন্তান হারিয়ে যায়নি, পৃথিবীতেই আছে।
চিকিৎসকের অবহেলায় হারিয়ে গেছে তার দুর্লভ সন্তান, খুব ছোটবেলা থেকে গল্প লেখায় সে ছিল সহজাত ও স্বতঃস্ফূর্ত,বেঁচে থাকলে অনেক বড় শিশু সাহিত্যিক সে হতে পারতো, তবে তার আগেই তাকে থামিয়ে দিল, তবে পৃথিবী থেকে হারিয়ে গেলেও তার কলমের যে সৃষ্টি গুলো রয়ে গেছে,এই অনবদ্য রূপকথা গুলো দিয়েই রাইদাহ এই পৃথিবীতেই বেঁচে থাকবে যুগ যুগ... অনন্তযুগ..!!