
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উপকূলীয় ও পার্বত্য অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় সম্ভাব্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
নিম্নচাপটি বর্তমানে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। এর ফলে সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে এবং উপকূলীয় এলাকাগুলোতে ৩ থেকে ৪ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস দেখা দিতে পারে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে পার্বত্য এলাকাগুলোতে ভূমিধসের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি অঞ্চলের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
নিম্নচাপজনিত দুর্যোগ এড়াতে অভ্যন্তরীণ ও উপকূলীয় রুটের সব ধরনের নৌযান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সবাইকে ঘন ঘন আপডেট অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়েছে এবং স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী নিরাপদ স্থানে অবস্থান নিতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস বলছে, অমাবস্যা ও গভীর নিম্নচাপের কারণে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, হাতিয়া, সন্দ্বীপ, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং জেলাগুলোর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে ১ থেকে ৩ ফুট বেশি উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টি
একদিনে মৌসুমের সর্বোচ্চ ১৬৮ মিলিমিটার বৃষ্টি নথিবদ্ধ হয়েছে নোয়াখালীর মাইজদীকোর্টে। এছাড়া ফরিদপুরে ১৫৯, কক্সবাজারের টেকনাফে ১৪৭, পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় ১৪৬, মানিকগঞ্জের আরিচায় ১২২, পটুয়াখালীতে ১১৬, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, ভোলায় ১১৩ মিলিমিটারসহ প্রায় সারাদেশে বৃষ্টি ঝরেছে।
সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় ১ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে হালকা, ১১ থেকে ২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি, ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি ধরনের ভারি, ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে ভারি এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হলে তাকে বলা হয়ে থাকে অতি ভারি বৃষ্টিপাত।
আবহাওয়ার নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
সেই সঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টি হতে পারে।
সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কমার আভাস এসেছে পূর্বাভাসে।