
মাত্র ছয় মাস দায়িত্ব পালন করেই পাকিস্তান জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন গ্যারি কারস্টেন। দক্ষিণ আফ্রিকার এই প্রখ্যাত কোচ সরাসরি জানিয়েছেন, পাকিস্তান দলের কোচ হিসেবে তিনি তার ভূমিকায় যথাযথ প্রভাব ফেলতে পারছিলেন না, যা তাকে ‘অর্থহীন’ মনে হয়েছে।
এক বিবৃতিতে কারস্টেন বলেন, “আমি খুব দ্রুত বুঝতে পেরেছিলাম, পাকিস্তান দলের কোচ হিসেবে আমার হাতে খুব কমই প্রভাব রয়েছে। এরকম সীমিত ক্ষমতার জায়গায় থেকে কাজ করার কোনো মানে হয় না। তাই আমি সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
এরপর থেকেই পাকিস্তান ক্রিকেটে আবারও শুরু হয়েছে অস্থিরতা। কেননা, সদ্য সাবেক এই কোচ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অত্যন্ত সফল এক নাম। ২০১১ সালে ভারতের কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জয় এবং পরবর্তীতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে র্যাংকিংয়ের শীর্ষে পৌঁছে দেওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার ঝুলিতে।
প্রশাসনিক অদক্ষতা ও সীমাবদ্ধ স্বাধীনতা?
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কোচিং কাঠামোর অভ্যন্তরীণ দুর্বলতাই পাকিস্তান ক্রিকেটের উন্নয়ন থমকে দিচ্ছে। গ্যারি কারস্টেনের মতো অভিজ্ঞ কোচ যদি নিজের কৌশল বাস্তবায়নের স্বাধীনতা না পান, তবে ভবিষ্যতে ভালো মানের কোচ নিয়োগ করাও চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
আগেও পাকিস্তান দলের কোচদের দায়িত্ব থেকে আগেভাগে সরে দাঁড়ানোর নজির রয়েছে। মিকি আর্থার, মিসবাহ-উল-হক, ম্যাথু হেইডেন—এদের অনেকেই বিসিবির অতিরিক্ত হস্তক্ষেপ কিংবা দিকনির্দেশনার ঘাটতির কারণে সময়ের আগেই বিদায় নিয়েছেন।
গ্যারি কারস্টেনের হঠাৎ পদত্যাগ পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) জন্য বড় ধাক্কা। এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টের আগে নতুন কোচ নিয়োগ এবং দলকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করা এখন প্রধান অগ্রাধিকার।
তবে শুধু কোচ বদলালেই চলবে না—বিশেষজ্ঞদের মতে, দরকার সাংগঠনিক সংস্কার। কোচের হাতে যদি স্বাধীনতা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের বাস্তব ক্ষমতা না থাকে, তাহলে যে-কোনো পরিকল্পনা ধাক্কা খাবে, এবং এর চূড়ান্ত ভুক্তভোগী হবে দলের পারফরম্যান্স।