১৮ জুন ২০২৫ , ৩ আষাঢ় ১৪৩২ 

শিল্প ও সাহিত্য

গুচ্ছ কবিতা

ছদ্মবেশ ও অন্যান্য

লুৎফুন নাহার লোপা

প্রকাশিত: ১৭:২৪, ১৮ জুন ২০২৫

ছদ্মবেশ ও অন্যান্য


ছদ্মবেশ


তার প্রতিশ্রুত যে কথাগুলো পাখি হতে চেয়েছিলো 
তারা এখন ফিরে আসে তপ্ত রোদ হয়ে,
শুধুই শুন্য মেঘ হয়ে বসে থাকি 
               ঝরে পরার অপেক্ষা বৃষ্টি দিবসে।

স্বপ্নের ভেতর অচেনা গাঙচিল 
ডেকে আনে হাহাকার,
একজোড়া চোখ জেগে থাকে সমুদ্র হয়ে। 

ভুলে যেতে যেতে সেরে উঠে সকলেই,
প্রেম ফিরে আসে ছদ্দবেশে। 


সময় হলোনা 


তাকে দেখতে যাবো ভেবে ভেবে 
বহুদিন কেটে গেছে - হয়নি কিছুই। 
অথচ একটু দূরেই প্রমত্তা যমুনা 
যার তীরে বসে 
আবিষ্কার হতে পারতো অন্ধকার। 

তাকে ভালোবাসিনা বহুদিন হলো 
আকাবাকা পাহাড়ি রাস্তার মতো 
অগ্যত ভুলতে বসেছি যেসব।

একসময়  সেই অভিশপ্ত দিনগুলো 
এগিয়ে নিয়েছি সকল কাজ ফেলে। 
দীর্ঘদিন একই রোডম্যাপে গজিয়ে উঠেছে 
হলুদ রঙের ফুল,
বহুদিন হয়ে গেলো 
অথচ একটু সময় হলোনা আর। 

 

প্রেম থেকে 


দেখো,আমি এখনো পড়ে আছি প্রেমে,
কিংবা আটকে আছি সেই চেনা ভ্রমে। 
যেন আমি ভাবছি সে তৃষ্ণার কথা,
কোথাও- জল থেকে দূরে।  

মনে হচ্ছে দীর্ঘদিন আমি বসে আছি 
একটি অতি প্রাচীন গুহার ভেতরে। 
আশে পাশের কত লোকজন এখোনো 
আসছে- ভাসছে,
তারপর 
কেও কেও চলে যাচ্ছে ঝরনার খোঁজে। 

আর আমি একা বসে দেখছি 
এইসব বৃষ্টির দিন। 

 

এক আলাপনে


প্রতিদিন বাড়ি ফেরার পথে মনে পড়ে 
আমরা কখনো নক্ষত্র দেখিনি নির্জনে,
কিংবা সপ্তাহ শেষে বেচে যাওয়া সময় 
খরচ করিনি লোকালয় থেকে দূরে। 
আমরা ভেবে নিচ্ছি আমাদের কিভাবে? 
যেভাবে - এইভাবে, সেইভাবে। 

সাংসারিক প্রাচুর্যের ভেতর ডুবে গেছে 
যেন দীর্ঘতম  স্বচ্ছল এক নদী,
ছেড়ে আসা সন্ধ্যার আলাপন থেকে 
আমরা সরিয়ে নিচ্ছি যে যার ভবিষ্যত। 

 

আমার কিছু নেই 


আমার বলতে আমার কিছু নেই,
যা কিছু আমার ভেবে মানিয়ে নিয়েছি এতদিন 
তা ছিল জীবনের অদ্ভুত প্রশ্রয়। 


যে প্রিয় বর্নগুলো ছড়িয়ে দিয়েছি বারান্দায় 
তারাও ধীরে ধীরে বিলীন হয়েছে সময়ে। 
অবশেষে ফিরে এসেছি দিগন্তে। 
প্রস্তুত হতে হতে ভেঙে যাচ্ছে,

ফুরিয়ে আসছে ভ্রমণের দিন 
অপ্রকাশ্য অভিমানে,
       আমার করে চেয়েছি যা কিছু।