
আমি এক শামুক, বহন করি আমারই নির্মিত পৃথিবী। দ্রুতগতির এই দুনিয়ায় আমার নীরবতা এক নিভৃত প্রতিবাদ—যেখানে প্রতিটি গুটিয়ে নেওয়া মুহূর্ত এক আত্মরক্ষার আচ্ছাদন। শব্দ যখন অস্ত্র হয়ে ওঠে, আমি আত্মগোপন করি খোলসের অন্তর্গহনে।
আমার খোলস কেবল আশ্রয় নয়, একটি স্মৃতির স্তূপ—যেখানে সময় জমে ওঠে পরতের পর পরত। প্রতিটি ধূলিকণায় লেখা থাকে থেমে থাকা পদচিহ্ন, আর প্রতিটি পদক্ষেপেই আমি লিখে রাখি ধৈর্যের দীর্ঘ চিহ্ন।
আমি জানি, প্রত্যেক গমনেই ফিরে আসার সুর আছে। ক্লান্তি যখন পৃথিবীর ওপর চেপে বসে, আমি হয়ে উঠি এক পরিমিত অস্তিত্ব, যে নিজের গা ঘেঁষে কল্পনা করে সমাপ্তিহীন যাত্রা। পথ আমাকে গ্রাস করতে চায়, আর আমি তাকে ধীরতার বিপরীতে দাঁড় করিয়ে রাখি। আমার নীরব গতি আসলে এক প্রতিরোধ—বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে সুশৃঙ্খল বিষণ্নতা।
আমি আর চিৎকার করি না। আমার খোলসই এখন আমার কবিতা। আমি এক স্নিগ্ধ, সংযত প্রাণ—যে জানে, গুটিয়ে নেওয়াটাই কখনো কখনো সবচেয়ে সাহসী উচ্চারণ।