
ভুলে যাও
ভুলে যেতে চাও? যাও।
স্মৃতির মুক্তো কুড়াতে কুড়াতে
নিরুদ্দেশের পানে ভাসাব
জীবন নদীর নাও।
ভুলে যেতে চাও? যাও।
দৃষ্টির আড়ালে যাবে যত,
হৃদয়ের তত কাছে ঠাঁই দিব।
পূর্ণ হবো একাকীর শূন্যতেও।
লে যেতে চাও? যাও।
পিছু ডাক ডাকব না
হৃদয়ের আকুতি জানাব না
সুখ যেথা পাও! যাও!
মিথ্যাপালক
চাহিদানুযায়ী যোগান থাকায়-
মিথ্যেরা জমজমাট বিবেকের বাজারে।
তুমি,আমি,আমরা নিরলসভাবে,নিষ্ঠাভরে,
মিথ্যের অক্ষরে তা দিই,
মিথ্যের কথা ফোটাই।
বাচ্চা বাচ্চা মিথ্যেরা সততার উঠোনে
গুটি গুটি পায়ে নাচে,হাঁটে ।
ক্ষুধা পেলে কাঁদে,
অশান্তির ফিডারে শান্তি গিলিয়ে দিই।
পৃথিবীতে শান্তির অভাব বাড়ে।
তাতে কি-কার কি?
মিথ্যেরা নাদুসনুদুস হয় ভালো লাগে।
হাত পা ছোড়াছুড়ি করে বিভেদ বাড়লে
ওদের তুলতুলে গালে আদর করি,বলি,
‘বুদ্ধিমান মিথ্যের বাচ্চারা
একদিন বাঘের বাচ্চা হবে।’
ওদের বড় করতে গিয়ে
দিনরাত আমাদের ছোট হতে
লজ্জা নেই, ক্লান্তি নেই।
তুমি,আমি,আমরা মিথ্যাপালক।
একদিন মিথ্যাতে ধ্বংস হবো।
সম্পর্ক
সব সম্পর্ক এক একটা দাঁড়িপাল্লা;
দেয়া নেয়া যার দুটি বাটখারা।
এই দু’বাটখারায় সর্বদা মাপা হয়
বিমূর্ত,মূর্ত সব লেনদেন।
কিন্তু তোমার জীবন!
তোমার একান্ত বাধ্যগত বিশ্বস্ত কুলি-
যতদিন দৈহিক বিনাশ না হয়
ঠিক ততদিন পর্যন্ত।
তুমি তোমার যত দুঃখ,কষ্ট
তাকে বহন করতে দেবে-
বহন করবে ঠিকঠাক মত।
বহন করতে গিয়ে
তার হাতে মোটা কালচে ঘা পড়ুক-
হৃৎপিণ্ড পর্দায় ফোসকা পড়ুক-
পা দুটো ক্লান্ত হয়ে অবশ হোক-
তবুও সে সামনে এগুবে।
তোমাকে ফেলে যাবে না!
অথচ তোমার বিপদের গন্ধ পেলে;
তোমার আশেপাশ থেকে ঘিরে থাকা শুভাকাঙ্ক্ষীরা,
তোমাকে ছুঁড়ে ফেলতে বিন্দুমাত্র সময় নেয় না।
আনন্দ ঠিক কর্পূরের মত
তোমার কাছে আসতে আসতে
মিইয়ে যায়
তবুও তোমার জীবন তাকে যতটা পারে,
ধরে রাখে তোমার জন্য।
তোমার নিকটজনরা যা ভোগ করতে আসে।
তোমার কর্মফলের ব্যর্থ অংশের জন্য তুমি জীবনকে দায়ী করো!
সে ব্যথিত হয়।
তবুও তার প্যান্ডোরার বাক্স খুলে
উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ তোমাকে উপহার দেয়।
জীবন শুধু দেয় দেয়!
তুমি গ্রহণ করতে করতে
দেউলিয়া হয়ে যাও।
অথচ জীবন তোমাকে দেউলিয়া ঘোষণা করে না।