
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের শপথগ্রহণ আটকে রাখার ঘটনায় নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। আদালতের রায়ে বৈধতা পেলেও অস্থায়ী সরকারের স্থানীয় সরকারবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ শপথের অনুমোদন দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ তুলেছেন ইশরাক। একই সঙ্গে তিনি উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেছেন।
বুধবার (১২ জুন) রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে ইশরাক বলেন, “জনগণের রায় স্পষ্ট। আদালতের রায়ও আমার পক্ষে। তবু কোনো অজানা রাজনৈতিক স্বার্থে আমাকে শপথ নিতে দেওয়া হচ্ছে না। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা মিথ্যাচার করছেন। জনগণের স্পষ্ট দাবি তিনি উপেক্ষা করছেন।”
“তিনি (স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা) বারেবারে বলেছেন, এখানে আইনি জটিলতা আছে, সাব জুডিস ম্যাটার আছে। অথচ বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত থেকে এই বিষয়টি বহু আগেই নিষ্পত্তি হয়েছে। তারপরও যদি তিনি বলেন আইনি ঝামেলা আছে তাহলে আমি বলব এই ধরনের মূর্খ উপদেষ্টা বাংলাদেশের ইতিহাসে কেউ কোনো দিন দেখে নাই।”
এর আগেই উচ্চ আদালতের এক আদেশে বলা হয়, ইশরাক হোসেন বৈধভাবে নির্বাচিত হয়েছেন এবং তাঁর শপথে কোনো আইনগত বাধা নেই। কিন্তু উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের দাবি, কিছু ‘আইনি জটিলতা’ এখনও নিষ্পন্ন হয়নি। তাই শপথগ্রহণ আপাতত সম্ভব নয়।
বিএনপি নেতা ইশরাকের এই অবস্থানকে কেন্দ্র করে তাঁর সমর্থকরা ঢাকা দক্ষিণের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ ও পদযাত্রা করেন। এসব কর্মসূচিতে তাঁরা শুধু স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার নয়, তথ্যমন্ত্রী মাহফুজ আলমেরও পদত্যাগ দাবি করেন। তাদের দাবি, অস্থায়ী সরকার এখন আর নিরপেক্ষ নয়, বরং বিশেষ রাজনৈতিক পক্ষের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছে।
সমাবেশে ইশরাক বলেন, “আমি কোনো রাজনৈতিক বাধা মানি না। আমাকে কেউ রশি দিয়ে বেঁধে চালাতে পারবে না। জনগণই আমার শক্তি।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, আদালতের রায় থাকা সত্ত্বেও শপথগ্রহণ ঠেকানো রাজনৈতিক কৌশলের ইঙ্গিত দিতে পারে। এতে অস্থায়ী সরকারের নিরপেক্ষতা ও গণতান্ত্রিক নীতির প্রশ্ন সামনে এসেছে। পাশাপাশি প্রশাসনিক অচলাবস্থার আশঙ্কাও জোরালো হয়েছে।
বিএনপির দাবি, অবিলম্বে ইশরাককে শপথ নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে এবং যাঁরা তা ঠেকাতে চাচ্ছেন, তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।