০১ জুন ২০২৫ , ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ 

লাইফস্টাইল

’ভাঙা হৃদয়’ পুরুষদের জন্য বেশি বিপজ্জনক!

বাংলা ওয়াচ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:২৫, ১৫ মে ২০২৫

’ভাঙা হৃদয়’ পুরুষদের জন্য বেশি বিপজ্জনক!

মানসিক আঘাত শুধু চোখের পানি বা নিঃশ্বাসে আটকে থাকা কষ্টের নাম নয়—তা হয়ে উঠতে পারে মৃত্যুর কারণও। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে, সম্পর্কের বিচ্ছেদ বা হৃদয় ভাঙার পর পুরুষদের হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি নারীদের তুলনায় অনেক বেশি।

গবেষণাটি পরিচালিত হয় ডেনমার্কের একদল গবেষকের দ্বারা, যেখানে ২০১০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ১,৭১৬ জন 'টাকোৎসুবো কার্ডিওমায়োপ্যাথি' রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়। এটি একটি হৃদরোগ, যেটি সাধারণত তীব্র মানসিক বা শারীরিক চাপের ফলে হয়। গবেষণায় অংশ নেওয়া রোগীদের মধ্যে ৭৪ শতাংশই ছিলেন পুরুষ, যাদের বেশিরভাগই কোনো না কোনো মানসিক আঘাতের শিকার হয়েছিলেন—যেমন: দীর্ঘদিনের সম্পর্কের ভাঙন, সঙ্গীর মৃত্যু, অথবা বিবাহবিচ্ছেদ। 

গবেষণার সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ তথ্য হলো,   পুরুষদের ক্ষেত্রে মৃত্যুহার ছিল প্রায় ৫০ শতাংশ,  আর নারীদের ক্ষেত্রে এটি ছিল ৩৮ শতাংশ। এছাড়া দেখা গেছে, নারীরা সাধারণত চিকিৎসার জন্য দ্রুত হাসপাতালে যান এবং মানসিকভাবে নিজেদের প্রস্তুত রাখতে সক্ষম হন। অন্যদিকে, পুরুষরা অনেক সময়েই আবেগ চেপে রাখেন, চিকিৎসা নিতে দেরি করেন, ফলে ঝুঁকিও বেড়ে যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সমাজ পুরুষদের ‘মজবুত’ থাকতে শেখায়। তারা কাঁদে না, অভিযোগ করে না, বরং চাপ নিজের ভেতরে পুষে রাখে। এই দমন করা আবেগই হয়ে ওঠে স্বাস্থ্যঝুঁকির অন্যতম বড় কারণ।

ঢাকার হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. নাসরিন হক বলেন, “আমরা প্রায়ই দেখি, সম্পর্কের টানাপড়েন বা দাম্পত্য জটিলতার পর পুরুষ রোগীরা স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাক নিয়ে আসেন। অথচ মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিলে এই পরিস্থিতি অনেকটাই এড়ানো যেত।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সম্পর্কের জটিলতা বা আবেগজনিত চাপ মোকাবেলায় পুরুষদের জন্য প্রয়োজন: মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা, কাউন্সেলিং বা থেরাপি, পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে খোলামেলা যোগাযোগ, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম, মেডিটেশন বা ধ্যান চর্চা।