
কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগানকে নির্যাতনের মামলায় কুড়িগ্রামের সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কুড়িগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোছাম্মৎ ইসমত আরা বেগম তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে সরাসরি কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
সাংবাদিক রিগানের আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্র জানায়, আজ সকাল সোয়া ১১টার দিকে আদালতের কক্ষে প্রবেশ করেন সুলতানা পারভীন। তিনি প্রথমে কাঠগড়ায় না উঠে বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সাংবাদিক আরিফের আইনজীবীর আপত্তি ও নির্দেশের পর তাঁকে কাঠগড়ায় তোলা হয়। আসামি পক্ষে জামিন আবেদনের শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ফখরুল ইসলামসহ কয়েকজন আইনজীবী।
আদালত প্রাথমিকভাবে প্রায় এক ঘণ্টা উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনেছেন। পরে শুনানি মুলতবি করে বেলা আড়াইটায় পুনরায় শুরু করা হয়। এজাহার পর্যালোচনা ও উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত সুলতানা পারভীনের জামিন নামঞ্জুর করে এবং পুলিশকে তাঁকে প্রিজন ভ্যানে করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ আগস্ট সুলতানা পারভীন হাইকোর্টে আগাম জামিন আবেদন করেছিলেন। হাইকোর্ট তাঁকে জামিন না দিয়ে চার সপ্তাহের মধ্যে কুড়িগ্রাম আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। এরপর ২১ আগস্ট কুড়িগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন করা হলেও আইন অনুযায়ী তিনি সশরীরে উপস্থিত হননি। এ নিয়ে সাংবাদিক আরিফের আইনজীবী আদালতে আপত্তি জানিয়ে একটি পিটিশন দাখিল করেন।
সুলতানা পারভীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০২০ সালের ১৩ মার্চ দিবাগত মধ্যরাতে সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগানকে তাঁর বসতঘরের গেট ভেঙে তুলে নিয়ে জেলা প্রশাসনের তিনজন ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পেটানো এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের নামে এক বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানা প্রদানের মাধ্যমে প্ররোচনা সৃষ্টি করা হয়। ঘটনার বিরুদ্ধে সারা দেশে প্রতিবাদের পর এক দিন পর সাংবাদিক আরিফকে জামিন দেওয়া হয়।
জামিনে মুক্তি পেয়ে কুড়িগ্রাম সদর থানায় তৎকালীন ডিসি সুলতানা পারভীন ও তিন ম্যাজিস্ট্রেটসহ অজ্ঞাত ৩০-৩৫ জনকে আসামি করে এজাহার দায়ের করা হয়। হাইকোর্টের নির্দেশে ৩১ মার্চ ২০২০ তারিখে মামলাটি রেকর্ড করা হয়। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) দীর্ঘ পাঁচ বছর তদন্তের পর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে।