
“ভাঙচুরের নামে বাজে কাজের পুরনো ধারা চললে সংস্কার করে কী লাভ?” এমন প্রশ্ন রেখেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ৬ থেকে ৮ অগাস্ট যদি ৩২ নম্বরের শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙচুর করে পুকুর তৈরি করে মাছ চাষ করত কেউ কিছু বলত না।
“ছয় মাস পরে আমাদের এই বোধ আসল কেন? আমরা যদি এমন ট্র্যাডিশন তৈরি করি, তাহলে আগামী দিন আপনার আমার বাড়ি ভাঙচুর হবে।
“ভাঙচুরের নামে বাজে কাজের পুরনো ধারা চললে সংস্কার করে কী লাভ?”
গণআন্দোলনে ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। সেদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যাওয়ার পর ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। সারাদেশে তার ভাস্কর্য, ম্যুরাল ও আওয়ামী লীগ কার্যালয়, নেতাদের বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়।
‘ফ্যাসিস্ট’ শেখ হাসিনার দুঃশাসনের কথা তুলে ধরে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর বলেন, “এখন শেখ মুজিবের মৃত্যু দিবস পালিত হবে ৫ অগাস্ট। শেখ হাসিনা তাকে তিলে তিলে শেষ করে দিয়েছেন।”
অন্তর্বর্তী সরকারকে পেছন থেকে কারা ইন্ধন দিচ্ছে তা দেশের মানুষ জানে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “ইসলামের নামে কারা দখলবাজি করছে তা বিভিন্ন দপ্তরে গেলে, বিভিন্ন অফিসে গেলে জানা যাবে।”
দ্রুত সংস্কার শেষ করার আহ্বান জানিয়ে সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, “কাল বিলম্ব না করে সময় মত, যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন দিন, সবাই আপনাদের স্যালুট জানাবে।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “জনগণ অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এই অদৃশ্য শক্তিকে দৃশ্যমান করতে হবে। একজন (শেখ হাসিনা) ষড়যন্ত্র করে কাপড় নিয়ে দেশে ছেড়ে পালিয়েছেন। এখন যারা নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন তারা আগামী দিনে কাপড় পরেও পালানোর পথ পাবেন না।
“আমার দেখেছি, রাষ্ট্র পরিচালনায় সরকারের মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। প্রধান উপদেষ্টা বলেন এক কথা, তার সহকারীরা বলেন আরেক কথা। প্রধান উপদেষ্টার কথা উপদেষ্টামণ্ডলীর সকলের কথা কিনা সে ব্যাপারেও আমাদের সন্দেহ আছে।”
গয়েশ্বর বলেন, “৩১ দফা একটি জাতীয় সনদ। ৬২টি দল একমত হয়ে এই সদন প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।”
জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ১২ দলীয় জোট ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ র্শীষক প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে।
কর্মশালা উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় ৩১ দফার বিস্তারিত তুলে ধরেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহাদি আমিন।
১২ দলীয় জোটের সমন্বয়কারী জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার সভায় সভাপতিত্ব করেন। সেখানে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-বিএলডিপি নেতা শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বিকল্পধারা বাংলাদেশের নুরুল আমিন বেপারী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) রাশেদ প্রধান, কল্যাণ পার্টির শামসুদ্দিন পারভেজ।