১০ জুলাই ২০২৫ , ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ 

জাতীয়

মিরপুরে নির্মিত হবে জুলাই যোদ্ধাদের জন্য ১,৫৬০টি ফ্ল্যাট

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা 

প্রকাশিত: ২০:২৪, ৯ জুলাই ২০২৫

মিরপুরে নির্মিত হবে জুলাই যোদ্ধাদের জন্য ১,৫৬০টি ফ্ল্যাট

জুলাই মাসে সংঘটিত গণ–অভ্যুত্থানে গুরুতর আহত ব্যক্তিদের জন্য ঢাকায় বিনা মূল্যে আবাসনের ব্যবস্থা করতে যাচ্ছে সরকার। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে মিরপুর ৯ নম্বরে ১ হাজার ৫৬০টি ফ্ল্যাট নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা, যা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে।

ফ্ল্যাটগুলো নির্মাণ করবে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে তারা প্রকল্প এলাকার জন্য নির্ধারিত জমিতে কাজ শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রতিটি ফ্ল্যাটের আয়তন হবে ১ হাজার ২৫০ বর্গফুট। ফ্ল্যাটে দুটি শয়নকক্ষ, একটি ড্রয়িংরুম, একটি লিভিং রুম, একটি খাবার কক্ষ, রান্নাঘর ও তিনটি শৌচাগার থাকবে। একজন আহত ব্যক্তির জন্য অতিরিক্তভাবে একটি পৃথক কক্ষ রাখা হবে, যেখানে তার প্রয়োজন অনুযায়ী সুবিধা যুক্ত থাকবে।

প্রকল্প বাস্তবায়নে জমি ভরাটসহ অবকাঠামোগত কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। নির্বাচিত জমিটি নিচু হওয়ায় সেখানে মাটি ফেলে ভরাট করতে হবে। এই কাজে ব্যয় হবে প্রায় ১২ কোটি টাকা। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ৫০ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ের প্রকল্পের জন্য সমীক্ষা বাধ্যতামূলক হলেও, এই প্রকল্পের জন্য এখন পর্যন্ত কোনো সমীক্ষা করা হয়নি।

ফ্ল্যাট কারা পাবেন, তা এখনো নির্ধারিত হয়নি। জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ, জুলাই অধিদপ্তর এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় যৌথভাবে তালিকা প্রস্তুত করবে। সরকার কর্তৃক প্রকাশিত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ‘অতি গুরুতর আহত’ হিসেবে ৪৯৩ জন এবং ‘গুরুতর আহত’ হিসেবে ৯০৮ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। মোট গুরুতর আহত ব্যক্তির সংখ্যা ১ হাজার ৪০১।

আহতদের পাশাপাশি শহীদ পরিবারদের জন্য আলাদা একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। মিরপুর ১৪ নম্বরে ৮০৪টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে, যার ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৬২ কোটি টাকা। এই ফ্ল্যাটগুলোর আয়তন হবে ১ হাজার ৩৫৫ বর্গফুট।

উভয় প্রকল্পেরই মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২৯ সাল পর্যন্ত। ৭ জুলাই ‘ঢাকার মিরপুর ৯ নম্বর সেকশনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কর্মক্ষমতা হারানো জুলাই যোদ্ধা পরিবারের জন্য আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় উপস্থাপন করা হয় এবং অনুমোদনের জন্য ইতিবাচক মতামত পাওয়া গেছে।

সরকার এর আগে আহত ও শহীদ পরিবারগুলোর জন্য এককালীন অর্থসহ মাসিক ভাতা চালু করেছে। এবার আবাসন নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেওয়া হলো।

জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মিরপুর হাউজিং এস্টেটে তাদের নিজস্ব জমিতে মোট ১৫টি ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। ফ্ল্যাটগুলো নির্মাণের সময় চলাচল-সুবিধাসহ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য প্রয়োজনীয় কাঠামো ও নকশা অনুসরণ করা হবে।