০৮ মে ২০২৫ , ২৩ বৈশাখ ১৪৩২ 

বিশাল বাংলা

‘শিরক’ বলেই কাটা হলো শতবর্ষী বটগাছ

বাংলা ওয়াচ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৯:৪৪, ৬ মে ২০২৫

‘শিরক’ বলেই কাটা হলো শতবর্ষী বটগাছ

মাদারীপুরে কুমার নদের পাশে শতবর্ষী একটি বটগাছ কাটা হয়েছে। এর কারণ হিসেবে বলা শিরক আখ্যা দেওয়া হচ্ছে। 

গতকাল সোমবার সকাল থেকে সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের আলমমীরের কান্দি এলাকায় কুমার নদের পাড়ে থাকা গাছটির ডালপালাসহ বেশির ভাগ অংশ কাটা হয়।

আজ মঙ্গলবার সকালে প্রশাসনের লোকজন গিয়ে গাছ কাটা বন্ধ করেন। গাছটির কাণ্ড, ডালপালা ও কয়েকটি শিকড় কাটা হলেও এখনো মূল শিকড় ও গোড়া কাটা বাকি।

গতকাল সকালে কয়েকজন ব্যক্তি গাছটি কাটা শুরু করেন। তাঁদের ভাষ্য, বটগাছের গোড়ায় নারীরা শিরনি ও মিষ্টি দেয়, কেউ কেউ লাল কাপড় বাঁধে। গাছটিকে দেবতা মনে করে পূজা করেন। এটা শিরক, যা ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তাই তাঁরা গাছটি কাটার উদ্যোগ নেন।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াদিয়া শাবাব বলেন, ‘পুরোনো গাছ কেটে ফেলার খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন ও বন বিভাগ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এটির পেছনে তৃতীয় কোনো পক্ষ কাজ করছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া বন বিভাগ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তার তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

স্থানীয়রা জানান, সদর উপজেলার সিরখাড়া ইউনিয়নের আলম মীরারকান্দি গ্রামের কুমার নদের পাশে স্থানীয় সাত্তার হাওলাদারের মালিকানাধীন একটি বাগানের মধ্যে শত বছরের একটি বটগাছ ছিল। কয়েক বছর ধরে গাছটিকে ঘিরে কিছু লোকজন নানা কর্মকাণ্ড করে আসছিলেন। তাঁরা মনের বাসনা পূরণ, রোগবালাই থেকে মুক্তি, সন্তান কামনাসহ নানা বিষয় নিয়ে মানত করতেন। গাছের গোড়ায় মোমবাতি, আগরবাতি জ্বালাতেন। পাশাপাশি নতুন গামছা, কাপড়, মিষ্টি, নাড়ু, হাঁড়ি-পাতিলসহ নানা জিনিসপত্র রেখে যেতেন। এমনকি গাছের শিকড়, ডালপালা ও মাটি নিয়ে যেতেন।

গাছ কাটায় অংশ নেওয়া আব্দুল কুদ্দুস নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘গতকাল আমিও গাছ কাটায় অংশ নিয়েছি। এই গাছকে ঘিরে শিরক চলে। গাছের গোড়ায় মোমবাতি, নতুন কাপড়, মিষ্টি দেওয়া হয়। যা পাপ ও শিরক। আল্লাহ এগুলো মেনে নেবেন না। তাই শতাধিক আলেম ও জনতা মিলে গাছটি কেটে ফেলা হয়েছে।’