
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের (ইইডি) প্রধান কার্যালয়ে নির্বাহী প্রকৌললী পদে কয়েকজনকে পদায়ন দিতে তোড়জোড় শুরু করেছেন প্রধান প্রকৌশল মো. আলতাব হোসেন। এরই মধ্যে ১০ জনের তালিকা শিক্ষামন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন তিনি। অভিযোগ রয়েছে, এই ১০ জনের মধ্যে অন্তত পাঁচজন সরাসরি ছাত্র-জনতা অভুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারে সমর্থক ও সুবিধাভোগী।
ইইডি সূত্র বলছে, ১৭ সেপ্টেম্বর পাঠানো তালিকায় নাম রয়েছে যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী রুয়েট ছাত্রলীগের নেতা মো. হাদিউজ্জামান খান, নওঁগার প্রদীপ কুমার সরকার, মেহেরপুরের মো. রাকিবুল আহসান, ময়মনসিংহের মো. ইউসুফ আলী, মুঞ্জিগঞ্জের মৌরিন আক্তার মৌ, বাগেরহাটের মো. নাফিজ আক্তার, সিরাজগঞ্জের মো. হাবিবুর রহমান, চাঁদপুরে মো. মঞ্জুরুল আলম শরীফ, পাবনার দীপক কুমার মণ্ডল, নড়াইলের অরুনাভ রায়।
ইইডি সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, নতুন ভবন নির্মাণ, বিদ্যমান ভবনের সম্প্রসারণ ও রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত, সংস্কার এবং আসবাব সরবরাহ করে। এ ছাড়া মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও আইসিটি ল্যাব স্থাপন, ইন্টারনেট সংযোগ, আইসিটি সুবিধা দেওয়ার কাজও করে থাকে অধিদপ্তরটি।
অভিয়োগ রয়েছে, প্রদীপ কুমার সরকার, হাদিউজ্জামান খান, দীপক কুমার মণ্ডল, ইউসূফ আলী এবং মঞ্জুরুল আলম শরীফ আওয়ামী লীগের সমর্থক ও সুবিধাভোগী। মূলত সরকারকে বিপদে ফেলার অংশ হিসেবে তাদের ঢাকার পায়ঁতারা চলছে।
সূত্র বলছে, ছাত্র জীবনে ছাত্রলীগের নেতা হাদিউজ্জামান খান, দীপক কুমার ও মঞ্জুরুল ইসলাম শরীফ আওয়ামী লীগ আমলের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত ছিল। হাদিউজ্জামান এর বাবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। আর রাকিবুল আহসান বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সক্রিয় সদস্য। এছাড়া রাকিবুল আহসান ও তার স্ত্রীর নামে দুর্নীতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদকে) তদন্ত চলমান। চাপাইনবাবগঞ্জে থাকাকালীন দুর্নীতির কারনে তাকে মেহেরপুরে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়। আর ইউসুফ আলী সাবেক কৃষি মন্ত্রী আব্দুল রাজ্জাকের আপন ভায়রা।
সূত্র বলছে, চিহ্নিত আওয়ামী লীগের সমর্থকদের প্রধান কার্যালয়ে পদায়নের উদ্যোগে সারাদেশের প্রকৌশলীদের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে।
এছাড়া অর্থের বিনিময়ে ঠিকাদারদের লাইসেন্স দেওয়া নিয়ে প্রধান প্রকৌশলী ও ইইডির প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তীব্র বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। মূলত অসন্তোষের শুরু প্রধান প্রকৌশলীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (মূল পদ উচ্চমান সহকারী) জহিরুল ইসলামকে লাইসেন্স কমিটিতে যুক্ত করা নিয়ে। কারণ নিয়ম অনুয়ায়ী, পদাধিকারবলে এ কমিটিতে জহিরুল ইসলামের থাকার কোন সুযোগ নেই।
সূত্র বলছে, জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে একই সঙ্গে দুটি সরকারী চাকরি করার অভিযোগ উঠলেও অদৃশ্য কারণে কোন ব্যবস্থাই নেননি প্রধান প্রকৌশলী। একই সঙ্গে দুই দপ্তরে চাকরি বিষয়ে ইতোমধ্যে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষামন্ত্রণালয়।