
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হলে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের ব্যাপক রদবদল হয়। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রনালয়ের আওতাধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরে (ডিআইএ) বহাল তবিয়তে আছেন মোহাম্মাদ মনিরুল ইসলাম। তিনি গত প্রায় ১০ বছর ধরে দপ্তরটিতে কর্মরত।
ডিআইএ থেকে জানা যায়, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সময় ২০১৬ সালে ডিআইএ-তে সহকারী শিক্ষা পরিদর্শক পদে পদায়ন পান মনিরুল ইসলাম। আর এ ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান। মূলত তার আধা সরকারি পত্র (ডিও লেটার) ও মৌখিক সুপারিশে ডিআইএ-তে পদায়ন পান তিনি।
ডিআইএর প্রধান কাজ স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তর বা সংস্থা পরিদর্শন এবং নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা। পরিদর্শনে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ও প্রশাসনিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা পেলে পরে প্রতিবেদনে সেগুলো তুলে ধরার পাশাপাশি ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। এর ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয় শিক্ষামন্ত্রনালয়।
সূত্র আরও বলছে, মনিরুল ইসলাম বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে নিজেকে পরিচয় দিতেন সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খানের ভাগনে হিসেবে। এই পরিচয়ের কারণে সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী দীপু মনি ও মহিবুল হাসান চৌধুরীও তাকে অন্য দপ্তরে বদলি করতে পারেননি।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হলে রাতারাতি ভোল পাল্টিয়ে নিজেকে জাতীয়তাবাদী আদর্শের লোক দাবি করছেন মনিরুল ইসলাম। যদিও এটি সত্য নয় বলে জানিয়েছে ডিআইএ-তে কর্মরত একাধিক কর্মকর্তা।
সূত্র আরও বলছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অডিটের নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আছে মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানার পরও অদৃশ্য কারণে তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাই নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয় নাম প্রকাশে ডিআইএ-এর অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা বলেন, গত ১০ বছরে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে শতকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন মনিরুল ইসলাম। যা ডিআইএ-তে অনেকটা ওপেন সিক্রেট।
সূত্র আরও বলছে, মনিরুল ইসলামের গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরে হওয়ায় বিগত আওয়ামীলীগ আমলে বিশেষ সুবিধা পেয়েছেন মনিরুল ইসলামসহ তার পুরো পরিবার। তার ডাক্তার স্ত্রীও আওয়ামী প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন।
এ বিষয় বক্তব্য জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও সাড়া দেননি শিক্ষা উপদেষ্টা শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার।