
ছাত্র-জনতার অভুত্থানে ক্ষমতার পটপরির্বতনের পর বিভিন্ন সরকারি দপ্তর-অধিদপ্তরে আওয়ামীপন্থি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনেকটাই কোণঠাসা। অনেকে হারাচ্ছেন চাকরি, আবার কাউকে বদলি করা হচ্ছে ঢাকার বাইরে।
তবে ব্যতিক্রম শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের অধীন শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে (ইইডি)। এ দপ্তরের বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদের সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মো. জাফর আলী সিকদার আছেন বহাল তবিয়তে। এরই মধ্যে সিরাজুল ইসলাম নির্বাহী প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) হিসেবে পেয়েছেন পদোন্নতি। পেয়েছেন ঢাকার পাশে মানিকগঞ্জে পোস্টিং। আর জাফর আলী সিকদারকে প্রাইজ পোষ্টিং হিসেবে পদ পেয়েছেন সাভার সার্কেলে।
এ দিকে এই দুই কর্মকর্তা কাজ দেওয়া-নেওয়ার অনিয়মের মাধ্যমে বিপুল বিত্ত-বৈভবের মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি এই দুই কর্মকর্তার অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগও জমা দেওয়া হয়েছে। দুদক সূত্র বলছে, অভিযোগে বলা হয়েছে এই দুই কর্মকর্তা নিজেদের আত্মীয়স্বজনকে দিয়ে ঠিকাদারি করিয়েই কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। এছাড়া তারা মিলে রাজধানীর খিলগাঁওয়ে বানিয়েছেন বিশাল বাড়ি।
জানতে চাইলে ইইডির প্রধান প্রকৌশলী (রুটিন দায়িত্ব) মো. আলতাফ হোসেন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এ ধরণের অভিযোগ থাকলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, নতুন ভবন নির্মাণ, বিদ্যমান ভবনগুলোর সম্প্রসারণ ও রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত ও সংস্কার এবং আসবাব সরবরাহ করে। এ ছাড়া মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, আইসিটি ল্যাব স্থাপন, ইন্টারনেট সংযোগ, আইসিটি-সুবিধা সরবরাহও করে।
ইইডি সূত্র বলছে, বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদের কয়েকবারের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম আওয়ামী লীগের ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে টানা ১৭ বছর ছিলেন প্রধান কার্যালয়ে। ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পরও গত ১০ ফেব্রুয়ারি ‘ম্যানেজ মাষ্টার হিসেবে খ্যাত’ সিরাজুল ইসলাম নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে পদোন্নতি পান। এরপর লোভনীয় পোষ্টিং হিসেবে বিবেচিত মানিকগঞ্জ জেলার দায়িত্বও পান। এ বিষয়ে ইইডির একাধিক নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, সিরাজুল ইসলামের হাতে আলাদীনের চেরাগ আছে। না হলে চিহ্নিত আওয়ামীলীগার হিসেবে পরিচিত থাকারও পরও কীভাবে সে পদোন্নতি ও ভালো পোষ্টিং পায়?
একই অবস্থা আওয়ামীপন্থি এই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাফর আলী শিকদারেরও। তিনিও টানা ১৮ বছর প্রধান কার্যালয়ে থেকে ছড়ি ঘুরিয়েছেন সবার ওপরে। তবে সম্প্রতি লোক দেখানোর জন্য তাকে বদলি করা করেছে সাভার সার্কেলে।